Header Ads

হক নষ্ট করা

 হক নষ্ট করা

কারো হক বা অধিকার নষ্ট করা, ধ্বংস করা, খর্ব করা ইত্যাদিকে ‘হকতলফী’ বলা হয়। ‘গছব’ মানে অনুরূপ কারো সম্পদ-সম্পত্তি আত্মসাত করা, হরণ করা, জোরপূর্বক বা জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া। অর্থাৎ অন্যায়-জুলুমের মাধ্যমে কারো ন্যায্য অধিকার হরণ করা।
ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে সমাজ, জাতি, রাষ্ট্র এমনকি আন্তর্জাতিক- সর্বক্ষেত্রেই অধিকার হরণের অন্ত নেই। ক্ষেত-ফসল, ফলমূল, পানির মাছ, ওষুধ দিয়ে, আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা, সহায়-সম্পদ, ঘরবাড়ি, ভূমি ইত্যাদি অন্যায় ও জোরপূর্বক দখল করা, সবই গছব ও হকতলফীর অন্তভর্‚ক্ত। এসব কার্যকলাপ সমাজে সর্বত্র ব্যাপকভাবে প্রচলিত। এ সম্পর্কে কুরআনের বহু আয়াতে সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে এবং এতদসংক্রান্ত অনেক হাদিসও রয়েছে। সাধারণত হক বা অধিকার দুই প্রকারের- ‘হুকুকুল্লাহ’ বা আল্লাহর অধিকার এবং ‘হুকুকুল ইবাদ’ বা বান্দার অধিকার। এই দ্বিতীয় প্রকারের অধিকারগুলোর মধ্যে মা-বাবার অধিকার সর্বাগ্রে। অর্থাৎ সন্তানের প্রতি যেমন বাবা-মায়ের নানা অধিকার রয়েছে, তেমনি বাবা-মায়ের প্রতিও সন্তানের বহু অধিকার রয়েছে।
এভাবে স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন, বিধবা, এতিম, অসহায়-অভাবী, রোগী, শ্রমিক-মজুর, অতিথি, প্রভৃতি শ্রেণীর পরস্পরের মধ্যে নানা অধিকার রয়েছে। ইসলাম প্রদত্ত এসব অধিকারের বিবরণ কুরআন ও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু অনস্বিকার্য যে, মানবতার দোহাই দিয়ে সর্বত্রই এসব মানবতাবিরোধী কার্যকলাপ দৃশ্যমান। এ সম্পর্কে উদাহরণস্বরূপ কয়েকটি হাদিস নিম্নে দেয়া হলো :

০১. হযরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি মিথ্যা বলে মুসলমানের হক অধিকার করছে, আল্লাহ তায়ালা জাহান্নামের আগুন তার জন্য অবধারিত করে রেখেছেন এবং জান্নাত তার জন্য হারাম করেছেন। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দরবারে আরজ করে, হে আল্লাহর রাসূল (সা.), যদি সামান্য বস্তু হয়? বললেন, ‘মেসওয়াকের কাঠি সমান হলেও (অতি সামন্য হলেও)।’ (মুসলিম)
০২. রাসূল (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তি এক আঙ্গুল পরিমাণ জমি অন্যায়ভাবে অর্জন করেছে, কেয়ামতের দিন সে টুকরো ভ‚মির সাত স্তর পর্যন্ত তার গর্দান শিকলবদ্ধ করে দেয়া হবে। (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত) বুখারি বর্ণিত হাদিসে আছে, সাত তবক জমি পর্যন্ত তাকে দাবিয়ে দেয়া হবে।
০৩. হযরত আবু হোরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর খেদমতে হাজির হয়ে আরজ করে, হে আল্লাহর রাসূল (সা.), আপনার কি অভিমত, যদি কোনো ব্যক্তি আমার কাছ থেকে আমার মাল ছিনিয়ে নিতে চায়? তিনি বললেন : ‘তুমি তাকে দেবে না’। সে বলল, আপনার কী মত, সে যদি আমাকে হত্যা করতে উদ্ধত হয়? তিনি বললেন : ‘তুমি তার সাথে লড়াই করো’। সে বলল, আপনার কী মত, সে যদি আমাকে হত্যা করে? তিনি বললেন : ‘তবে তুমি শহিদ বলে গণ্য হবে’। সে বলল, আপনার কী মত, যদি আমি তাকে হত্যা করি? রাসূল (সা.) বললেন : ‘সে হবে জাহান্নামি, সে অপরের মাল আত্মসাত করার কারণে নিহত হয়েছে। (মুসিলম)।
০৪. হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) বলেছেন : ‘যে ব্যক্তি নিজের মালের হেফাজত করতে গিয়ে নিহত হয়েছে, সে শহিদ। (মুসলিম)।
০৫. হযরত মুখারেক ইবনে সুলাইম (রা.) কর্তৃক বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর খেদমতে এসে আরজ করে, যদি কেউ আমার কাছে এসে আমার মাল ছিনিয়ে নিতে চায়? রাসূল (সা.) বললেন : তাকে তুমি আল্লাহকে ভয় করতে বলো।’ সে বলল, লোকটি যদি আল্লাহকে ভয় করে ওই কাজ থেকে বিরত না হয়? রাসূল (সা.) বললেন : ‘তোমার আশেপাশের মুসলমানদের সাহায্য প্রার্থনা করো’।
সে বলল, যদি আমার আশেপাশে কোনো মুসলমান না থাকে? রাসূল (সা.) বললেন : সুলতান ও শাসনকর্তার সাহায্য চাও’। লোকটি বলল, সুলতান বা শাসনকর্তা যদি আমার থেকে দূরে সরে যায়? রাসূল (সা.) বললেন : ‘(এমতাবস্থায়) তোমার মালের হেফাজতের জন্য লড়াই করো, এমনকি তুমি শহিদদের অন্তভর্‚ক্ত হয়ে যাবে অথবা তোমার মাল রক্ষা করবে।’ (নাসায়ি)।
মাল-দৌলত, সহায়-সম্পদ, যা বৈধভাবে অর্জিত, তা আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামতস্বরূপ, যার হেফাজতের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত, এতে সওয়াবও রয়েছে। একে বিনষ্ট ও ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। মাল-দৌলতের হেফাজত করতে গিয়ে প্রাণ হারালে শহিদের মর্যাদা লাভ করবে। পক্ষান্তরে অন্যায়ভাবে কোনো মাল-সম্পদ গ্রাস করলে এবং ধোকাবাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে অর্জন করলে, তা হবে হারাম এবং সে ব্যক্তি হবে জাহান্নামি।

 

1 comment:

  1. 2021 ford escape titanium hybrid - TIT Nordic
    2020ford escape titanium hybrid · 1. Dovo Solingen. 2019 ford edge titanium for sale 2020ford escape titanium hybrid. 2020ford escape titanium hybrid. 2020ford titanium exhaust tubing escape titanium hybrid. 2021ford escape babyliss titanium flat iron titanium hybrid. 2020ford titanium pots and pans escape. nano titanium by babyliss pro 2020ford

    ReplyDelete

Powered by Blogger.